Header Ads

Header ADS

হাসি এবং কান্নার প্রেমের গল্প/ গার্লফ্রেন্ড নিয়ে প্রথম ট্যুর..........


#আত্মচরিত_তবে_সংগ্রহীত
#একটু_মিথ্যা_মানে_কাল্পনিক
#কাহিনীটা_অনেক_হাসির_এবং_কষ্টেরও_বটে
#কারো সাথে মিলে গেলে লেখকসহ যার আত্মচরিত দুজনকেই ক্ষমা করে দিবেন।


আমাদের দুজনের বাড়ি একই দিকে মানে একই জেলায় কিন্তু উপজেলা আলাদা। একজনের বাড়ি থেকে আরেকজনের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১৭-২০ কিলোমিটার হবে। আমি থাকি ঢাকায় আর সে থাকে বরিশালে। একদিন ঠিক করলাম দুজনে একসাথে একই গাড়ীতে পাশাপাশি বসে বাড়ি যাবো। যেই কথা সেই কাজ। ইদুল আযহার ছুটিতে কলেজ বন্ধ হলো আর আমিও অফিস থেকে ছুটি পেলাম। আমি ঢাকা থেকে বরিশালে চলে এলাম। তার কাছে থাকার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কোনো মতে সম্ভব ছিল না তাছাড়া থাকার কোনো যুক্তিই নাই। বন্ধুর বাসায় উঠলাম। বরিশালে একদিন থেকে তারপর পরেরদিন একসাথে যাবো তাই ঠিক করলাম। তো রাতে কথাবার্তা বলে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম কারণ সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।
ও আচ্ছা তার পরিচয় দেয়া হয়নি! সে আমার ভালোবাসার মানুষ "রতি"। সে এবার অনার্স ৪র্থ বর্ষে পড়ে। অনেক মেধাবী ছাত্রী কিন্তু পড়তে চায় না। অনেক বলেও পড়তে বসানো যায় না তবে পরীক্ষার সময় তার পড়া ছাড়া আর কোনো কাজ নাই। আমিও পরীক্ষার সময় কোনো ধরণের ডিস্টার্ব করি না। ও আচ্ছা আমার নামটাও তো বলা হলো না। আমার নাম "সোহাগ"। আমি মাস্টার্সে পড়ি। আমি একদম ভালো ছাত্র না। টেনেটুনে পাস করার মতো ছাত্র। আমাকে পড়ার জন্য সে অনেক চাপ দেয় আর আমিও মোটামোটি পড়ি কারণ অফিস করে পড়তে বসতে একটু কষ্ট হয় তাই বেশি পড়াও হয় না। মজার ব্যাপার হলো আমরা দুজন একই বিষয়ে।
যাই হোক এবার আসল ঘটনা মানে বাস ভ্রমণে চলে আসি। একদম সকালে উঠে দুজনে যার যার বাসায় বসে রেডি হলাম। আমি একটু তাড়াতাড়ি বের হয়ে রতি'র বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। রতি বের হলো। সামনে এসে এক গাল হাসি। হাসিটা কেমন ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না। তারপরও একটু না বললে আপনাদের ভালো লাগবে না। আসলেই হাসিটার বর্ণনা আমি দিতে পারবো না (তোমার হাসিটা সারাজিবন অমলিন থাকুক)। এবার দুজনে একটা সিএনজি নিয়ে রূপতলী বাসস্ট্যান্ডে গেলাম। পথে মধ্যে অনেক কথা হয়েছে যেগুলো বললে পাঠক সমাজ রাগ করে পুরো কাহিনীটা পড়বেন না। দুজনের কেউ সকালের নাস্তা করিনি তাছাড়া অত সকালে করাও সম্ভব ছিল না। রুপাতলী গিয়ে দুজনে একটা হোটেলে নাস্তা করে নিলাম। মোটামোটি রতি'র ক্ষুধাও লেগেছিল কম না।
এবার টিকিট কিনে দুজনে গাড়ীতে উঠে বসলাম। আমাদের সিট নং হলো ৯-১০। আমাদের সিট দুটো বাসের ডান পাশে ছিল। রতিকে আমি জানালার পাশে বসতে বললাম কিন্তু রতি আমাকেই জানালার পাশে দিল কারণ বৌ নাকি সব সময় স্বামীর বাম পাশে বসে। আমি বললাম, তুমি তো এখনো বৌ হওনি🤣। যাক পরেরগুলো বললে রতি আমার সাথে অভিমান করবে। আমি ওকে অভিমান করাতে চাই না কারণ অভিমান করে রতি অনেক কান্না করে যেগুলো আমি সহ্য করতে পারি না। আমি জানালার পাশেই বসলাম। কি কি যেন কিনেছিলাম বাসে বসে খাওয়ার জন্য। খেলাম আর গল্প করতে করতে অনেক দূর চলে এলাম। আমাদের গন্তব্যে যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগে যাবে। অর্ধেকের বেশি পথ চলে এলাম। হঠাৎ রতি'র চেহারা যেন কেমন হয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলাম,
-কি হয়েছে?
-কিছু না।
-না তোমার কিছু তো হয়েছে! বমি আসতেছে নাকি?
-না বমি না। আপনি বসেন তো।( রতি আমাকে স্বামীর মতো আপনি করেই বলে এবং আপনি ডাকটা আমারো অনেক ভালো লাগে যদিও মাঝে মাঝে তুমি বলার জন্য জোর করি🤣)
-বমি হলে আচার খাও। এপাশে আসো।
-আরে না, ২ পাইছে।(প্রাকৃতিক ডাক)
-কি বলো! গাড়ী থামাতে বলবো।
- না থাক। দেখি কতদূর যেতে পারি।
-আরে না গাড়ী থামাতে বলি।
-কিছু করা লাগবে না। আপনি চুপ করে বসেন।
আমাদের দুজনের অবস্থা গাড়ীর মধ্যে আমাদের আশে পাশের সবাই দেখছিলো আর কেমন জানি করেছিল। যাক তারা যা মন চায় করুক। তারপর আমি রতির হাত ধরে চুপ করে বসে আছি। মাঝে মাঝে রতি উম্ উম্ করে ওঠে আবার আমার দিকে তাকিয়ে হাসে। ওর অবস্থা দেখে আমার খুব কষ্ট হয়। যখন দেখে আমার কষ্ট হচ্ছে তখনই ও হাসি দেয়। আমি হাসি আবার অনেক কষ্টও হয়। কিছুক্ষণ পর পর শুধু উম্ উম্ করে ওঠে আমার আর সহ্য হচ্ছে না। আমি বলি আমরা এখানে নেমে যাই। পরের গাড়ীতে আবার যাবো। কিন্তু রতি বলে, আর বেশি পথ বাকি নাই তো। এরপর আর কি করার আমিও ওকে সাহস দেয়া শুরু করলাম কিন্তু ভিতরে অনেক কষ্ট হচ্ছে আবার হাসিও পাচ্ছে। সম্পূর্ণ পরিস্থিতিটাই যেন কেমন হলো। আমাদের ৪ বছরের সম্পর্কের এই প্রথম লং জার্নি। তাও ঘোলাটে। কি আর করার সবই কপাল।
যাই হোক রতি'র বাড়ির স্ট্যান্ড চলে এসেছি। রতি ওর ব্যাগ নিয়ে নেমে যাচ্ছে। আমার এখন অনেক কষ্ট হচ্ছে। ভালোভাবে বিদায় না দিতে পেরে আবার ও ২ এর কাজের জন্য কষ্ট পাচ্ছে। গাড়ী থেকে নেমে ব্যাগটা পাশের দোকানে রেখে দিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করেছে। আমি ওর দ্রুত হেঁটে যাওয়া দেখছি আর অনেক কষ্ট পাচ্ছি। যতদূর দেখা যায় ততদূর দেখেছি। দেখা ছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিল না।
কিছুক্ষণ পর রতিকে আমি কল দেই কিন্তু কল রিসিভ হয় না। আমার চিন্তা আরো বেড়ে যায়। কি হলো ফোন ধরে না কেন! অনেকক্ষণ পরে রতি আমাকে কল দিয়ে শুধু হাসি আর হাসি। কিন্তু আমার তখন অনেক কান্না পেয়েছিল। ভালোভাবে জার্নি করতে পারিনি😥 একটু ভালোভাবে গল্প করতে পারিনি😥 ভালোভাবে বিদায় দিতে পারিনি😥 ফোন রিসিভ করতে দেরি করেছিল😥 ঠিক মতো বাথরুমে যেতে পারছে কিনা😥 রতিকে রেখে চলে যাচ্ছি😥। সব মিলিয়ে খুব কষ্ট পেয়েছি।
কাহিনীটা যাকে বলি সে-ই হাসে।
রতি'র কাছ থেকে যারাই শুনছে তারাই হাসছে। কিন্তু আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি।😥
যাই হোক মোটামোটি ভালো একটা জার্নি করেছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আমরা এভাবে আরো অনেক অনেকবার জার্নি করতে পারি।
আর হ্যাঁ তুমি আমাকে এখন যেভাবে ভালোবাসতেছো সারাজিবন এভাবেই ভালোবেসো।
আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি রতি।
তোমার হাসিটা সব সময় এভাবেই রেখো।

আরো পড়ুন
নীল আকাশে রাখা এক টুকরো আশা

No comments

Powered by Blogger.