Header Ads

Header ADS

সৌরজগত কী? সৌরজগতের সদস্যসমূহের পরিচয়

সৌরজগত কাকে বলে?
                                                              চিত্র: সৌরজগত
সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীসহ আরো ৭টি গ্রহ ও অন্যান্য জ্যোতিষ্ক ঘুরছে। সূর্য এবং একে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান সকল জ্যোতিষ্ক ও ফাঁকা জায়গা নিয়ে আমাদের সৌরজগত গঠিত। সৌরজগতের বেশির ভাগ জায়গাই ফাঁকা সূর্যকে কেন্দ্র করে ৮টি গ্রহ বিভিন্ন দূরত্বে থেকে ঘুরছে।

সৌরজগতের সদস্যসমূহের পরিচয়


                                                                       চিত্র: সূর্য
সূর্যঃ সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য। সূর্য অন্যান্য নক্ষত্রের মতো একটি জ্বলন্ত গ্যাসপিত্ত এই জ্বলন্ত গ্যাসপিত্তে রয়েছে মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস, হাইড্রোজেন গ্যাসের পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে হিলিয়াম পরমাণুতে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। এ শক্তি তাপ ও আলোকশক্তি হিসেবে সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই সূর্যের কাছ থেকে আমরা তাপ ও আলো পেয়ে থাকি।



                                                  চিত্র-: সৌরজগত
সূর্য মাঝারি আকারের একটি নক্ষত্র। তারপরেও এটি পৃথিবীর তুলনায় লক্ষ লক্ষ গুণ বড়। সূর্য পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ কোটি কি.মি. দূরে অবস্থিত। তাই পৃথিবী থেকে আমরা সূর্যকে এত ছোট দেখি।

গ্রহঃ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে ৮টি গ্রহ। পৃথিবী এমন একটি গ্রহ। গ্রহসমূহ সাধারণত গোলাকৃতির। গ্রহগুলোতে বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থ রয়েছে। কিন্তু গ্রহগুলো নিজেরা শক্তি উৎপাদন করে না। তাই কোনো গ্রহ নিজে আলো বা তাপ নিঃসরণ করে না। পৃথিবী থেকে সূর্যের অন্যান্য গ্রহকে উজ্জ্বল দেখালেও এগুলো আসলে সূর্যের আলোয় আলোকিত।

গ্রহগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় নি¤েœ তুলে ধরা হলো:
                                                                         চিত্র: বুধ
বুধঃ বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ। এতে কোন বায়ুমন্ডল নেই।
                                                                        চিত্র: শুক্র
শুক্রঃ পৃথিবী থেকে সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে সন্ধ্যাতারা এবং ভোরবেলায় শূকতারা রূপে যে তারাটি দেখা যায়-সেটি কোনো নক্ষয় নয়। এটি আসলে সূর্যের একটি গ্রহ-যার নাম শুক্র। সূর্যের আলো এ গ্রহের উপরে পড়ে। তাই আমরা একে আলোকিত দেখি।
                                                                    চিত্র: পৃথিবী
পৃথিবীঃ কেবল পৃথিবীতেই জীবনের জন্য উপযোগী উপকরণ ও পরিবেশ রয়েছে। পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে তৃতীয় গ্রহ।
                                                                         চিত্র: মঙ্গল
মঙ্গলঃ মঙ্গলকে কখনো কখনো লাল গ্রহ বলা হয় কারণ এর পৃষ্ঠ লাল রঙের। এর পৃষ্ঠ ধূলিময় এবং খুবই পাতলা বায়ুমন্ডলে রয়েছে। মঙ্গলের মাটির নিচে পানি থাকার সম্ভাবনা আছে বলে বিজ্ঞানীরা এখন মনে করেন।
                                                                     চিত্র: বৃহস্পতি
বৃহস্পতিঃ বৃহস্পতি সূর্যের সবচেয়ে বড় গ্রহ। এটিতে শুধু গ্যাসই রয়েছে। কোনো কঠিন পৃষ্ঠ নেই।
                                                                     চিত্র: শনি
শনিঃ শনি গ্রহটিও কেবল গ্যাস দিয়ে তৈরি। এটিকে ঘিরে কতগুলো রিংব া আংটা রয়েছে।
                                                                   চিত্র: ইউরেনাস
ইউরেনাসঃ ইউরেনাস গ্যাস ও বরফ দিয়ে গঠিত।
                                                                    চিত্র: নেপচুন
নেপচুনঃ নেপচুনও অনেকটা ইউরেনাসের মতো একটি গ্রহ।
                                                                        চিত্র: প্লুটো
আগে প্লুটো নামক একটি জ্যোতিষ্ককে গ্রহ বলা হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেন যে, এটি একটি ক্ষুদ্র অসম্পূর্ণ গ্রহ।
                                                                        চিত্র: উপগ্রহ
উপগ্রহঃ সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। তেমনি গ্রহগুলোকে কেন্দ্র করে ঘুরছে উপগ্রহ। পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ। এটি পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। উপগ্রহগুলো আকারে গ্রহের চেয়ে অনেক ছোট হয়। নিজেরা তাপ বা আলো উৎপন্ন করতে পারে না। এরা তাই সূর্যের আলো দ্বারা আলোকিত হয়। সূর্যের আলো চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে প্রতিফলিত হয় বলে আমরা চাঁদকে আলোকিত দেখি। চাঁদ ২৭ দিন ৮ ঘণ্টায় একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। চাঁদ প্রাচীনকালে থেকে মানুষের আগ্রহের বস্তু। যে সব রাতে চাঁদ দেখা যায় না তাকে অমাবস্যা বলা হয়। তার পরের রাতে সরু এক ফালি চাঁদ পশ্চিম আকাশে অল্প সময়ের জন্য দেখা যায়। এই সরু এক ফালি চাঁদ প্রতি রাতে বড় হতে থাকে। দুই সপ্তাহ এর চাঁদকে একটা থালার মতো দেখায় যাকে আমরা পূর্ণিমা বলে থাকি। পূর্ণিমার পরের রাত থেকে চাঁদটি আবার ছোট হতে থাকে। ছোট হতে হতে চাঁদকে আবার দুই সপ্তাহ পর কোনো এক রাতে এক বারের জন্যও দেখা যায় না। ২৯ বা ৩০ দিন পর পর আমরা অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হতে দেখি।
চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হলেও পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে ২৫০০ এর বেশি মানুষ প্রেরিত উপগ্রহ। এদেরকে কৃত্রিম উপগ্রহ বলে। এ কৃত্রিম উপগ্রহগুলো বেতার ও টেরিযোগাযোগ, আবহাওয়া এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রেরণ করা হয়। পৃথিবীর মতো অন্য গ্রহেরও প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে।
                                                                        চিত্র: জ্যোতিষ্ক
সৌরজগতে অন্যান্য জ্যোতিষ্কঃ আমাদের সৌরজগতে সূর্য, গ্রহ এবং উপগ্রহ ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য জ্যোতিষ্ক। এরা হলো- ধুমকেতু, উল্কা ও গ্রহানু। সূর্যকে কেন্দ্র করে এরা ঘুরছে। গ্রহের চেয়ে আকারে বেশ ছোট কঠিন শিলাময় বা ধাতব বস্তু- যাদের নাম গ্রহানু। এরা ক্ষুদ্র গ্রহের মতো। ধুমকেতুসমূহ আবার সৌরজগতের অংশ। এরা কঠিন (গ্যাস, বরফ ও ধূলিকণা) পদার্থ দিয়ে তৈরি। তবে তাপ পেলে কিছু অংশ সহজেই গ্যাসে পরিণত হয়। যখন ধূমকেতুসমূহ সূর্যের কাছাকাছি যায় তখন সূর্যের তাপে গ্যাসীয় ও কঠিন পদার্থ নির্গত হয়ে আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন এটি সোটার মতো দর্শনীয় লেজে পরিণত হয়। কোনো কোনো ধূমকেতু অনেক বছর পরপর পৃথিবীর আকাশে দেখা যায়। হ্যালির ধূমকেতু গড়ে ৭৫ বছর পরপর পৃথিবী থেকে দেখা যায়। একে ১৯১১ সালে এবং ১৯৮৬ সালে দেখা গেছে। পরে আবার ২০৬২ সালে দেখা যাওয়ার কথা।
                                                                   চিত্র-: ধুমকেতু
কখনো রাতের বেলায় হঠাৎ আকাশে আগুনের গোলক ছুটে যেতে দেখা যায়। এরা উল্কাপিÐ। সূর্যের চারপাশে ঘূণায়মান জ্যোতিষ্কসমূহের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হলো উল্কাপিÐ। এই ক্ষুদ্র কঠিন পিত্ত পৃথিবীর বায়ুমÐলে পৌঁছালে বায়ুর সংস্পর্শে এসে পুড়ে যায়। এ জন্য এদেরকে অগ্নিগোলকের মতো ছুটে বা পড়ে যেতে দেখা যায়। কখনো কখনো বড় উল্কাপিত্ত আধপোড়া অবস্থায় পৃথিবীপৃষ্ঠে পড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি করে।


No comments

Powered by Blogger.